গাছের ঝরাপাতা আর আগুন রাঙা পলাশ জানান দিচ্ছে দুয়ারে ফাল্গুন, ঋতুরাজ বসন্ত বরণে প্রস্তুত প্রকৃতি।
প্রকৃতির সঙ্গে উড়ু উড়ু মানুষও। সজীব রঙের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে সবার মনে।
ক্যালেন্ডারের হিসাবে এবারের ফাল্গুন আসছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে সঙ্গী করে। আর তাই বাঙালির ফাল্গুনের প্রথম দিন মিলেমিশে একাকার হবে সারা বিশ্বের ভালোবাসাপ্রিয় মানুষের উৎসবের সঙ্গে।
পয়লা ফাল্গুনে বাসন্তী রঙের পোশাকের চাহিদা বাড়ছে প্রতি বছর। এবার সেই পোশাকে ভালোবাসার বাড়তি ছোঁয়া আনতে প্রস্তুতি নিয়েছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস।
পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস কেন্দ্র করে রঙ, অঞ্জন’স, কে-ক্র্যাফট, দেশাল ও বাংলার মেলার মতো ফ্যাশন হাউসগুলো এনেছে বৈচিত্র্যময় বাহারি পোশাক।
কে-ক্র্যাফট থেকে নারীরা বেশি কিনছেন কোটা, সিল্ক, হাফসিল্ক, সুতি ও কাতান শাড়ি। এসব শাড়িতে আছে চমৎকার সব হ্যান্ড পেইন্ট, হাতে সুতার কাজ, স্ক্রিন প্রিন্ট ও ব্লকের কারুকার্য। দাম ২ হাজার ২০০ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।
পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে কে-ক্র্যাফট এনেছে বৈচিত্র্যময় পোশাক
ছেলেদের জন্য কে-ক্র্যাফট এনেছে হ্যান্ড পেইন্ট ও হাতে সুতার কাজ করা পাঞ্জাবি। রকম ভেদে এসব পাঞ্জাবির দাম ২ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা।
৬০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে কে-ক্র্যাফটে পাওয়া যাচ্ছে বাচ্চাদের বসন্তের পাঞ্জাবি। আর ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে শিশুদের থ্রিপিস ও টপস।
কে-ক্র্যাফটের বসুন্ধরা সিটি আউটলেটের ব্যবস্থাপক নাসির হোসেন বলেন, ‘একই দিনে দুই দিবস পড়ায় আমরা সেভাবেই পোশাকের বৈচিত্র্য সাজিয়েছি। অন্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা কিছুটা কম। তবে আশা করছি বাকি কয়েক দিনে বিক্রি ভালো হবে।’
ছোট-বড় বিভিন্ন বয়সীর জন্য ফ্যাশন হাউস ‘রঙ’ এনেছে বাহারি রং ও কাজ করা পোশাক। পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস ঘিরে তাদের আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে ব্যতিক্রমী শাড়ি, পাঞ্জাবি, টপস ও টি-শার্ট।
ছোট-বড় বিভিন্ন বয়সীর জন্য ফ্যাশন হাউস ‘রঙ’ এনেছে বাহারি পোশাক
রঙ-এর বসন্তের হাফসিল্ক, কটন ও তাঁতের শাড়িতে রয়েছে হ্যান্ড পেইন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক ও হাতে সুতার কাজ। দাম ৯০০ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছেলেদের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায়।
মেয়েশিশুদের জন্য বসন্তের শাড়ি ও টপসের দাম ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। আর ছোট ছেলেদের পাঞ্জাবি ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত।
দেশি ফ্যাশন হাউসের মধ্যে অন্যতম নাম অঞ্জন’স। শুধু ফাল্গুন সামনে রেখেই তারা সাজিয়েছে বৈচিত্র্যময় পোশাক।
অঞ্জন’স-এ বসন্ত উপলক্ষে পাওয়া যাচ্ছে কটন, কাতান, হাফসিল্ক ও সুতি শাড়ি
বসন্ত উপলক্ষে কটন, কাতান, হাফসিল্ক ও সুতি শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে অঞ্জন’স-এ। এসব শাড়িতে আছে হ্যান্ড পেইন্ট, হাতে সুতার কাজ, স্ক্রিন প্রিন্ট ও ব্লক প্রিন্ট। দাম শুরু ২ হাজার টাকা থেকে। শুধু বসন্ত উপলক্ষে হাতে সুতার কাজ করা বলাকা সিল্ক শাড়ি নিয়ে এসেছে তারা। সর্বোচ্চ দাম ১৮ হাজার ২০৫ টাকা।
এ ছাড়া ২ হাজার ৬০০ থেকে শুরু করে ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে থ্রিপিস। হ্যান্ড পেইন্টের টপসের দাম ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৮৫০ টাকা।
মেয়েশিশুদের জন্য রয়েছে ৮৩০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা দামের টপস। অঞ্জন’স-এ ১ হাজার ২৫০ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে বড়দের পাঞ্জাবি।
অঞ্জন’স-এর বসুন্ধরা সিটি আউটলেটের ম্যানেজার গৌতম মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বসন্তটাকে ধরে আমরা কাজ বেশি করেছি। আমাদের অন্য শোরুমে একটু কম হলেও এখানে বিক্রি মোটামুটি ভালো চলছে।’
শুধু তাঁতের শাড়িতে বসন্তকে সাজিয়েছে ফ্যাশন হাউস ‘দেশাল’। ব্লকের কাজ করা এসব শাড়ির সর্বোচ্চ দাম ১ হাজার ২০০ টাকা। হ্যান্ড পেইন্ট ও হাতে সুতার কাজ করা তাঁতের শাড়িও রয়েছে দেশাল-এ।
শুধু তাঁতের শাড়িতে বসন্তকে সাজিয়েছে ফ্যাশন হাউস ‘দেশাল’
তাদের বসন্তের কামিজ সাড়ে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি চলছে।
অন্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি কিছুটা কম বলে জানালেন বসুন্ধরা সিটির দেশাল ব্যবস্থাপক আশফাক আহমেদ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবার মানুষ কোনো উৎসব পালন করতে পারবে কি না জানি না। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা বেশি কিছু করিনি, শুধু শাড়িই বেশি রেখেছি।’
ফ্যাশন হাউস ‘বাংলার মেলা’ ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এনেছে বিশেষ শাড়ি ও পাঞ্জাবি। এখানকার হাফ সিল্কের শাড়িতে রয়েছে হাতে সুতার কাজ ও প্রিন্ট ব্লক। ১ হাজার ৬৫০ থেকে ৪ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে শাড়িগুলো। আর হ্যান্ড প্রিন্ট ও ব্লকের কাজ করা পাঞ্জাবি ৯৫০ থেকে ৪ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
‘বাংলার মেলা’ ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এনেছে বিশেষ শাড়ি ও পাঞ্জাবি
ফ্যাশন হাউস ‘বাংলার মেলা’র বসুন্ধরা সিটি শোরুমের ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলাম জানান, করোনার কারণে এবার তারা বেশি কিছু করেননি। শুধু শাড়ি-পাঞ্জাবিতেই বসন্তকে সাজিয়েছেন তারা।